বাড়ি রং করবেন? জানুন কখন, কোথায়, কিভাবে এবং কি রং করবেন

asian-paints-roof-waterproofing-Kolkata

জীবনকে হাসি খুশি ও রঙ্গিন রাখার ক্ষেত্রে, অবসাদকে দূরে রাখতে, মন চনমনে রাখতে আপনার চারপাশের রঙের ভূমিকা অসীম। আর তাই তো শপিং মল, থিয়েটার, ব্যাংকুয়েট হল, বাচ্চাদের স্কুল এসব জায়গাকে নানান আকর্ষণীয় রঙে পেইন্ট করা হয়, যাতে সেখানে গেলেই আপনার মন ফুরফুরে হয়ে যায়, বলছেন প্রোকন টেক সার্ভিসেসের একজন অভিজ্ঞ Asian Paints roof waterproofing Kolkata এক্সপার্ট।

বাড়ির ক্ষেত্রেও আমরা পুজোর আগে, বা পরিবারের কারো বিয়ের (বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানের) আগে রং করাই। সবাই কম বেশি চেষ্টা করি ‘আরেকটু দামি’ রং দেওয়ার যাতে তাদের বাড়ি সুন্দর দেখায়। কিন্তু একজন weatherproof painting Kolkata এক্সপার্টের মতে বাড়ির জায়গা (ভেতর/বাহির), আপনার সাধ্য এবং দেওয়ালের অবস্থা অনুযায়ী রঙের ধরণ অনেক পাল্টে যেতে পারে। তাই সঠিক জানকারী না থাকলে হবে পয়সার অপচয় ও বাড়ির ক্ষতি। আসুন তাই এসব ভুল করার আগে বিশদে জেনে নিই কোনটা ঠিক, আর কোনটা ভুল।

বাড়ি রং করার সঠিক সময় কোনটা?

পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ার হিসেবে শীতকাল হচ্ছে বাড়ি রং করার সব থেকে উপযুক্ত সময়। কারণ বর্ষার পর শীতে দেওয়াল ভালো করে শুকিয়ে অথচ রোদের তেজ কম থাকে। গ্রীষ্মকালে রোদের তাপ প্রচন্ড বেশি থাকায় রং খুব দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং বয়েসের আগেই ‘পাপড়ি’ হয়ে যায়।

এছাড়াও ‘সঠিক সময়’ বলতে আরো কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখা জরুরি। আপনার বাড়ি নতুন হোক বা পুরোনো, নিচের পয়েন্ট গুলো অবশ্যই মাথায় রাখবেন:

  • একদম নতুন বাড়িতে রং করবেন না। কমপক্ষে ৩মাস অপেক্ষা করুন যাতে দেওয়াল ভালোভাবে শুকিয়ে যায় এবং সিমেন্টের কেমিক্যাল রিএকশন থিতিয়ে যায়।
  • পুরোনো বাড়ি রং করার আগে দেওয়াল থেকে পুরোনো রং খুব ভালোভাবে তুলে ফেলা খুব জরুরি, নাহলে নতুন রং আপনার দেওয়ালের সাথে ‘বন্ডিং’ তৈরী করতে পারবে না এবং সময়ের আগেই নষ্ট হয়ে যাবে।
  • দেওয়ালে নোনা লেগে গিয়ে থাকলে, আগে পুরো সংক্রমিত জায়গা ভালোভাবে কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করান।
  • গ্রীষ্ম বা বর্ষার সময় রং না করানোই ভালো। এতে রঙের আয়ু কমে যায়।

জায়গা হিসেবে কি রঙের ‘কোয়ালিটি’ পাল্টে যায়?

হ্যাঁ, সমস্ত রং কোম্পানি বিভিন্ন প্রয়োজন ও বিভিন্ন জায়গা হিসেবে নানান প্রকারের ‘বিশেষ গুন সম্পন্ন’ রঙের ফর্মুলা তৈরী করে। অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা আছে যে সব রং-ই মোটামুটি এক এবং অযথা ওসব ‘দামি’ রং কেনার কোনো মানে হয়না। কিন্তু আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে, বাড়ির ভেতরের রং উজ্জ্বল ও উচ্চ আলো-প্রতিফলনকারী হয়; কিন্তু চড়া রোদ, বর্ষার জল চূড়ান্ত শীত সহ্য করার মতো ক্ষমতা তার থাকে না। তাই ভেতরের রং (ইন্টেরিয়র পেইন্ট) যদি বাড়ির বাইরের দেওয়ালে দেন, তো প্রাথমিক ভাবে খুব আকর্ষণীয় লাগলেও কয়েকমাস পরেই সে তার জেল্লা হারিয়ে ফেলবে এবং পাপড়ি হয়ে যাবে। এর ফলে এই ক্ষতিগ্রস্ত রং আপনার দেওয়ালকে আর রোদ-জল থেকে বাঁচাতে পারবে না এবং একজন roof waterproofing Kolkata এক্সপার্টের মতে, দেওয়ালে ড্যাম্পের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আবার, বাথরুমের ক্ষেত্রে আপনার বিশেষ প্রকারের ওয়াটারপ্রুফ পেইন্ট করানো খুব জরুরি যাতে করে বাথরুমের জল আপনার দেওয়াল পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে।

দেওয়ালে রং করার সঠিক পদ্ধতি কি?

হ্যাঁ, অনেক ভালো রংই আপনাকে সন্তোষজনক রঙিন বাড়ি উপহার দিতে পারে না। কারণ অধিকাংশ আনাড়ি রং মিস্ত্রিই হয় রং করার সঠিক নিয়ম জানে না, বা জানলেও তার প্রয়োজন বোঝে না এবং কিছু কিছু ধাপ বাদ দিয়ে দেয়। প্রথমত পুরোনো দেওয়াল হলে, আগের রং অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে তুলে ফেলতে হবে। নাহলে পুরোনো রঙের কেমিক্যাল আপনার নতুন রংকে নষ্ট করে দিতে পারে বা রং এর শেড পাল্টে যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, যদি দেওয়ালে পুট্টি করান, তো অবশ্যই ভালো কয়ালিটির পুট্টি কিনবেন এবং ভালো করে মিক্স করবেন।

একজন Asian Paints roof waterproofing Kolkata এক্সপার্টের মতে, চেষ্টা করবেন পানীয় জলের মতো কম TDS-এর জল দিয়ে মিশ্রণ তৈরী করতে। এবং কখনোই ভিন্ন কোয়ালিটির পুট্টি ব্যবহার করবেন না। তৃতীয়ত, পুট্টি করার পর ভালো করে পুরো দেওয়াল শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষে সমান করতে হবে। যত ভালো করে দেওয়াল ঘষে মসৃন করা হবে, রঙের উজ্জ্বলতা ততো ভালো হবে। এবং সর্বোপরি, শিরিষ দেওয়ার পর পুরো দেওয়াল ভালো করে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে সমস্ত গুঁড়ো সরাতে হবে।

কোন কোয়ালিটির রং আমার বাড়ির জন্যে উপযুক্ত?

প্রতিটা বাড়ি-মালিকের এই জায়গাটাতেই থাকে সব থেকে বেশি প্রশ্ন। কারণ রঙের মিস্ত্রি, রঙের দোকান, ইন্টারনেট, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের তথ্য পায় এবং তার অধিকাংশই তাঁরা বুঝতে পারেন না এবং শেষমেশ বেশি দাম দিয়ে একটা ভুল রং কিনে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু সামান্য কিছু সাধারণ জ্ঞান আপনার খরচ অনেক কমিয়ে দিতে পারে এবং ফলাফলও হবে অনেক ভালো। আসুন দেখে নি প্রোকনের অভিজ্ঞ building restoration Kolkata ইঞ্জিনিয়ার কি বলছেন।

  • বাড়ির ভেতরের জন্যে ইন্টেরিয়র পেইন্ট এবং বাইরের দেওয়ালের জন্যে অবশই এক্সটেরিওর পেইন্ট নেবেন।
  • দেওয়ালে কারুকার্য থাকলে ম্যাট পেইন্ট সেটাকে ভালো ফুটিয়ে তুলতে পারবে। কিন্তু সমতল দেওয়ালের ক্ষেত্রে গ্লসি পেইন্টই ভালো।
  • রংএর LFR (Light Reflecting Factor বা আলো প্রতিফলনের ক্ষমতা) যত বেশি হবে, আপনার বাড়ির ভেতর ততো উজ্জ্বল ও ঝকঝকে লাগবে। যত গাঢ় রং ব্যবহার করবেন, ততো LFR কম হবে, এবং বাড়ি অন্ধকার মনে হবে।
  • গাঢ় রং আপনার খুব পছন্দের হলে বাকি দেওয়ালে উচ্চ LFR যুক্ত রং ব্যবহার করুন যাতে বাড়ি অন্ধকার না মনে হয়।
  • রং করার আগে দেওয়ালে ভালো কোয়ালিটির প্রাইমার অবশ্যই লাগাবেন। আপনি যে কোম্পানির রং কিনবেন, সেই কোম্পানির নির্দেশ মতো অয়েল-বেস্ট বা ওয়াটার-বেস্ট প্রাইমার ব্যবহার করবেন; নাহলে রং টেকসই হবে না।
  • রঙের সঙ্গে লেবেলে লেখা নির্দেশ অনুযায়ী জল মেশাবেন। রঙের ঘনত্ব বেশি হলে যেমন রং ঠিকঠাক ছড়ানো সম্ভব হবে না, বেশি জল মিশিয়ে ফেললে রঙের জেল্লা কমে যাবে, এমনকি শেড-ও পাল্টে যেতে পারে।
  • স্প্রে মেশিন ব্যবহার করলে খেয়াল রাখবেন যেন রঙের আস্তরণ খুব মোটা বা পাতলা না হয়ে যায়। আবার রোলার ব্যবহার করলে প্রয়োজন মতো দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোট পেইন্ট করবেন। দুটো কোটের মধ্যে যেন কম পক্ষে ২৪ঘন্টার ফারাক থাকে; অর্থাৎ আগের পেইন্ট ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে তবেই পরেরবার পেইন্ট করবেন।
  • রঙ দিয়ে প্যাটার্ন বা কারুকার্য করলে, মিস্ত্রিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে দেওয়ালের সুরক্ষা নষ্ট না হয়।

উপরোক্ত সমস্ত বিষয় মাথায় রাখলে আপনি নিশ্চই এক দারুন সুন্দর রং পাবেন যা হবে টেকসই ও আপনার দেওয়ালের পক্ষে ভালো। বিশদে জানতে বা সঠিক নিয়মে আপনার বাড়ি রং করাতে এক্ষুনি যোগাযোগ করুন আমাদের অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে।