ঘটনা ১: সামান্য একটা একতলা বাড়ি বানানোর জন্যে আবার ইঞ্জিনিয়ার ডাকার কি আছে? আমাদের সময় সব কাজ তো পাড়ার রাজমিস্ত্রিরাই করতো — কোনো সমস্যা হয়নি। তোদের সবেতেই বাড়াবাড়ি। শুধু টাকা নষ্ট।
ঘটনা ২: বাড়িটা অনেক পুরোনো হয়ে গেছে। দেওয়ালের গোড়ায় নোনা লেগে ক্ষয়ে গেছে আর সিলিঙের পলেস্তরাও খসে পড়ছে। বাবা বলছিলো ইঞ্জিনিয়ার ডেকে করাতে। আমি লোকাল একজন মিস্ত্রির সাথে কথা বললাম। বললো এরম অনেক বাড়ির মেরামত করেছে। জানিনা ইঞ্জিনিয়ার ডেকে খরচ বাড়ানোর কি আছে।
ঘটনা ৩: ছাদে জল পড়ছে। শুধু ছাদের ওপর একটা চিপস-কংক্রিটের আস্তরণ দিয়ে দিলেই হবে। এতে তো ইঞ্জিনিয়ার ডাকার কোনো প্রয়োজন নেই। জগাই-কাকাকে ডাকলে ২দিনেই সব কাজ করে দেবে। খামোখা roof waterproofing Kolkata ইঞ্জিনিয়ারদের ডাকা মানেই দুনিয়ার খরচ। একি কোনো সরকারি প্রজেক্ট নাকি?
এরম হাজারো বাস্তব উদাহরণ আছে, যেখানে আমরা ইঞ্জিনিয়ারের থেকে পাড়ার জানাশোনা রাজমিস্ত্রি দিয়ে কাজ করাতে অনেক বেশি সাচ্ছন্দ বোধ করি, এবং অনেক ক্ষেত্রে মিস্ত্রি খরচও কিছুটা কম হয়। তাহলে অকারণে এসব ছোটোখাটো কাজে কি home repair service near me Kolkata এর ইঞ্জিনিয়ারদের ডাকার সত্যিই কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে? আসুন এই সংক্রান্ত কিছু ভুল ধারণার ব্যাপারে একটু বিশদে জানি।
ভুল ধারণা ১: ইঞ্জিনিয়ার মানেই বাড়তি খরচ
একদমই ভুল ধারণা। সাধারণ রাজমিস্ত্রির ‘কাজের খরচ’ হয়তো কিছুটা কম হয় ঠিকই। কিন্তু তারা অনেক ক্ষেত্রেই এমন কিছু ভুল কাজ করে যার কারণে আপনার কাঁচামালের খরচ তো বাড়েই, আপনার বাড়িও সঠিক মজবুতি পায়না। আর তার ফলে কিছুদিন পর থেকেই বাড়ির পেছনে খরচ শুরু হয়ে যায়। তাই সামান্য কিছু টাকা বাঁচাতে গিয়ে আপনার এই ইনভেস্টমেন্ট নষ্ট করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে?
ভুল ধারণা ২:আমাদের জগাই-কাকা দুর্দান্ত কাজ করে
একজন সাধারণ মানুষের কাছে ‘ভালো রাজমিস্ত্রি’ বলতে বোঝায় — ১. কম বেতনে কাজ করে, ২. কাঁচামালের খরচ কম রাখে, ৩. দৈনিক ধার্য সময়ের থেকে বেশি কাজ করে, ৪. জায়গা অপরিচ্ছন্ন করে না, এবং সর্বোপরি ৫. আপনার সমস্ত আবদার বিনা তর্কে মেনে নেয়। কিন্তু মনে রাখবেন, একটি বাড়ি, তা সে যতই সাধারণ মানের হোক, বিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে বছরের পর বছর দাঁড়িয়ে থাকে এবং আপনাকে সুরক্ষা দেয়। যেখানে, একটা টিভি, মোবাইল এমনকি একটা জামা বা কুর্তিও আপনি ভালো ব্রান্ডের জিনিস দেখে শুনে কেনেন, সেখানে জীবনের সব পুঁজি একজন হাতুড়ে মিস্ত্রির হাতে ছেড়ে দেবেন?
আপনার জমির মাটি কি ধরণের, কিরকম ভীত কতটা গভীরতায় বানানো উচিত, বাড়ির কলামে কোন মাপের রড ব্যবহার করা উচিত, কংক্রিটে সিমেন্ট-বালি-পাথর-জলের অনুপাত কোথায় কেমন হওয়া উচিত, সিল-বন্ড কতটা উচ্চতায় কিধরনের দেওয়া উচিৎ, দেওয়াল গাঁথনির সঠিক নিয়ম কি, লোড ডিস্ট্রিবিউশন কিভাবে করবেন, কিভাবে বাথরুমের সঠিক ওয়াটারপ্রুফিং করা উচিত, এরকম হাজারো ব্যাপার আছে যেখানে অনেক হিসেবে নিকেশ করে এগোতে হয়। আপনার রাজমিস্ত্রি কি সত্যিই এতসব হিসেবে বোঝে? তাই ঠিকাদারের বা লোকাল রাজমিস্ত্রির ভরসায় না থেকে নিজের পয়সার মূল্য বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।
ভুল ধারণা ৩: এই মিস্ত্রি কত সুন্দর সুন্দর বাড়ি বানিয়েছে
একটা বাড়ির দুটো ভাগ থাকে — ১. আর্কিটেকচার অর্থাৎ অন্তিম রূপ/ডিজাইন, এবং ২. সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অর্থাৎ কাঠামোর বিজ্ঞান। আপনার মতো সাধারণ মানুষ শতকরা ৮০ ভাগ নজর দেয় এই ডিজাইনে, এবং মাত্র ২০ ভাগ বা তারও কম নজর থাকে কাঠামোর মজবুতিতে। এর ফলে একটা নতুন বাড়ি হয়তো ভেঙ্গে পড়বে না। কিন্তু কিছুদিন পরই বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল (Hair-Line Crack) দেখা দেওয়া, বাথরুমের দেওয়ালে জল লিক করা, ড্রেনে ব্লকেজ, বাড়িতে আলো-হওয়ার অভাব, ইত্যাদি নানান সমস্যা দেখা দেয়। বাকি ভূমিকম্প, মাটি বসে যাওয়া, বাড়ির উচ্চতা বাড়ানো ইত্যাদি বিপদের কথা নাহয় বাদ-ই দিলাম। তাই নিজের মনের মতো এখানে ওখানে সিঁড়ি বানানো, জলের ট্যাংক, সিঁড়ি ঘর বানানো, ঝুলবারান্দা বানানো এসব আবদার আপনার লোকাল রাজমিস্ত্রি মেনে নিলেও, আপনার জীবনের দায়িত্ব ওরা নেবে তো — প্রশ্ন করুন নিজেকে।
ভুল ধারণা ৪: বুঝলাম! কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারের খরচ তো অনেক?
মধ্যবিত্তদের মধ্যে এই ভুল ধারণার খুবই প্রচলন আছে। কিন্তু বাস্তব বলে, ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে বাড়ি বানালে খরচ ‘আখেরে’ অনেক কম হয় এবং আপনি চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারেন যে আপনি একটি সঠিক মজবুতির ও সঠিক সৌন্দর্যের বাড়ি পাবেন। একজন roof waterproofing Kolkata ইঞ্জিনিয়ারই পারে আপনাকে আপনার স্বপ্নের থেকেও ভালো বাড়ি বানিয়ে দিতে এবং তাও আবার আগের থেকে আপনাকে সমস্ত খরচের হিসেব দিয়ে। আপনি নতুন বাড়ি বানান বা পুরোনো বাড়ির মেরামত করান, একজন ইঞ্জিনিয়ারের থেকে ভালো রেজাল্ট আর কেউ দিতে পারবে না।
একজন ইঞ্জিনিয়ারের সাথে পরামর্শ করতে এখানে ক্লিক করুন।